ঢাকা,বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

গুলি করে বন্য হাতি হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
চকরিয়ায় উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের কালাপাড়ায় বন্য হাতির বাচ্চাকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় মো.রহিম উল্লাহ (৪০) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তাকে দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে হাতির বাচ্চা হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ডিসেম্বর) সকালে খুটাখালী বাজার এলাকা থেকে থানার এসআই নূরে খোদা সিদ্দিকী নেতৃত্বে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
রহিম উল্লাহ লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের লায়লার মারপাড়া এলাকার ছাবের আহমেদের ছেলে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) নূরে খোদা সিদ্দিকী চকরিয়া নিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার সকালে খুটাখালী এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওই ইউনিয়নের কালাপাড়ায় বন্য হাতির বাচ্চাকে গুলি করে হত্যা মামলায় মো.রহিম উল্লাহ নামের আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করলে থানার ওসি’র নির্দেশ মোতাবেক বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চকরিয়ায় সোপর্দ করা হয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা নূরে খোদা সিদ্দিকী আরও বলেন, আটক রহিম উল্লাহকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করে হাতির বাচ্চা হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছেন। একইসঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরো কয়েকজনের নাম বলেছেন তিনি। তদন্তের স্বার্থে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সেইসব ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করতে চাননি।
মামলা সূত্রে জানাগেছে , গত ৬নভেম্বর (শুক্রবার) রাতে উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের কালাপাড়া এলাকায় একদল বন্য হাতি ধানখেতে হানা দেয়। এ সময় হাতির দলকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন ধানখেতের মালিক নাছির উদ্দিন ও মিজান উদ্দিন। গুলিতে বন্য হাতির তিন বছর বয়সী একটি মাদী বাচ্চা মারা গেলে ধানখেতের পাশে জঙ্গলের ভেতরে মাটিতে পুঁতে রাখেন। স্থানীয় লোকজন খবর পেয়ে বন বিভাগকে জানালে বন বিভাগ গত ৮ নভেম্বর মাটি খুঁড়ে হাতির মরদেহটি উদ্ধার করেন। এরপর চকরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সুপন নন্দী ও ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান নিহত হাতিটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন। ময়নাতদন্তে হাতিটির কপালে একটি গুলির চিহ্ন পায় ময়নাতদন্তকারী দল।
হাতির বাচ্চা হত্যাকান্ডের ঘটনায় কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের খুটাখালী বনবিট কর্মকর্তা রেজাউল করিম বাদী হয়ে গত ৯নভেম্বর (সোমবার) ১৯২৭ সালের বন আইনের ২৬ (১) (খ) ও বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২–এর ৩৫ (১) ধারায় দুজনের নাম উল্লেখ করে চকরিয়া থানায় মামলা রুজু করা হয়। এ মামলায় আরও পাঁচ ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাকের মুহাম্মদ যুবায়ের চকরিয়া নিউজকে বলেন, বন্য হাতির বাচ্চাকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলার সন্দিগ্ধ এক আসামিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়। পরে ওই আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে তিনি নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করে হাতির বাচ্চা হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন বলে তিনি জানান।

পাঠকের মতামত: